সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন
পরিবারের অভাব-অনটন দূর করতে শহীদুল্লাহরা পাড়ি জমান মরুর দেশ সৌদি আরবে। খুব একটা পড়ালেখা না জানায় শ্রমিক হিসেবেই তার যাত্রা। এ ছাড়া দক্ষতাও কম, যে কারণে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে দেশটিতে আসেন। শহীদুল্লাহর মতো এমন হাজারো শ্রমিক রয়েছেন। যাদের উপার্জিত অর্থে ভালো থাকে তাদের পরিবার, সচলও থাকে দেশের অর্থনীতির চাকা।
জানা গেছে, শহীদুল্লাহর দেশের বাড়ি টাঙ্গাইলে। সম্প্রতি তিনি শ্রমিক ভিসায় ক্লিনার হিসেবে দেশটিতে আসেন। মূলত পরিবারের অভাব ঘোচাতেই তার এত পরিশ্রম।
রিয়াদে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নিচে দেখা যাচ্ছে অলিতে গলিতে কত শত শহীদুল্লাহ। ওরা মাথায় গামছা বেঁধে বৃষ্টি অতিক্রম করে ব্যস্ত থাকেন কাজে।
শহীদুল্লাহরা কখনো থেমে থাকেনি। থামবেও না। অর্থনীতির চাকা ঘোরাচ্ছে এমন লাখো শহীদুল্লাহ। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি, শীত উপেক্ষা করে অল্প বেতনে কাজ করছেন এসব প্রবাসীরা। দেশটির বিভিন্ন রাস্তায় হাজার হাজার বাংলাদেশি তরুণকে দেখা যায়। তাদের বেশিরভাগই ক্লিনার।
শহীদুল্লাহ বলেন, ‘প্রথম প্রথম রাস্তায় দাঁড়িয়ে দুই-এক ঘণ্টা কাজ করতেই হাঁপিয়ে যেতাম। কাজ ফেলে বিশ্রাম নেয়ায় বকুনি খেতাম। কিন্তু দেশে থাকা বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ের কথা মনে করে গরমে কাজ করার আভ্যাস গড়ে তুলি। এখন গরম বা শীতে কাজ করতে খারাপ লাগলেও গা সইয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘কোম্পানি থেকে রোদে কাজ করতে বিশেষ ধরনের পোশাক দেয়া হয়। কিন্তু তাতেও রোদ, বৃষ্টি মানে না। শুধু দেশে থাকা ফ্যামিলির মুখের দিকে তাকিয়ে রোদে পুড়ে আয় করি।’
একটা সময় ছিল বাংলাদেশ থেকে সৌদিতে শ্রমিক আসত খুবই অল্প খরচে। ধীরে ধীরে খরচের পরিমাণ বেড়ে এখন ছয়-সাত লাখেও আসা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও অন্য সব দেশ থেকে খুবই অল্প খরচে এখনো শ্রমিকরা এখানে আসেন।
এত কিছুর মধ্যেও নিজের ভাগ্য পরির্বতন আর দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। আবার কাউকে কাউকে পড়তে হচ্ছে ভাগ্যবিড়ম্বনায়। জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাদের শ্রমিকদের। কফিলের (ভিসা প্রদানকারী) ফাঁদে পড়েও সর্বশান্ত হচ্ছেন অনেক শ্রমিক।
Leave a Reply