সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন
চাটখিল ও সোনাইমুড়ি (নোয়াখালী) সংবাদদাতা: নির্ধারিত সময়ের আগেই বর্তমান বছরে নোয়াখালী জেলার চাটখিলে ইরিধান রোপন সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষা দ্রুত শেষ হওয়ায় এবং পানি নেমে যাওয়ায় কৃষকরা এ কাজ করেছেন। তাছাড়া কৃষি গবেষণা উদ্ভাবিত পারচিং পদ্ধতি ব্যবহার করায় কৃষকের অর্থ সাশ্রয় হয়েছে।
জানা গেছে, চাটখিলের ১ পৌরসভা ও ৯ ইউনিয়নের ৮ হাজার হেক্টর জমিতে ইরিধান রোপন করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রীড ৬ হাজার ৫শ এবং উফসী ১ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। হাইব্রীড ধানের মধ্যে হীরাÑ২, হীরাÑ৪ সহ অন্যান্য এবং উফসীর মধ্যে ব্রী-ধান ৭৪, ২৯, ৬৭, ২৮ জাতের ধান রয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আগে বর্ষা শেষ হয়েছে। বর্ষার পানি দ্রুত নামতে থাকলে কৃষকও তড়িঘড়ি করে ইরিধান রোপন শুরু করে। শীতকালে কোল্ড ইনজুরি জনিত কোন সমস্যাও এবার হয়নি। তবে ইরিধান রোপনের সময় দিনমজুরের প্রচুর সংকট দেখা দিয়েছে। এতে দিনমজুরকে অধিক মজুরি দিয়ে ইরিধান রোপন করতে হয়েছে।
কৃষি গবেষণা উদ্ভাবিত পানচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকের প্রচুর অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ধানক্ষেতে ঢাল পালা পুতে দেওয়া হয়। এতে এ সমস্ত ঢালপালায় রাতে পেঁচা বসে এবং জমির ইঁদুর মেরে ফেলে। দিনে ফিঙ্গে (হেউচ্চা) পাখি বসে। এ পাখি পোকামাকড় ধরে খায়। এতে পরিবেশবান্ধব কৃষি এবং কীটনাশক ছাড়াই ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে। সারাদেশে এ পদ্ধতি ব্যবহারে কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। শংকরপুর গ্রামের ইরিধান চাষী কৃষক আবুল হোসেন, শহীদুল্লাহ জানান, তিনি এবার ইরিধান চাষ করতে দিনমজুর এবং ধানের চারার সংকট পোহাতে হয়। এতে তাদের ইরিধান রোপন করতে খরচ বেশি পড়েছে। একই কথা জানালেন সাধুরখিল গ্রামের কৃষক আবু ছালেহ। এখানে ইরিধান ক্ষেতে পানি সেচ সরবরাহকারী গভীর সেচকল গুলো কৃষকদের নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। অথচ সরকার এসব গভীর নলকূপকে বিদ্যুৎ বিলের শতকরা ২০ ভাগ ভর্তুকি প্রদান করছে। ইরিক্ষেতে সেচের পানি সরবরাহে সরকার ভর্তুকি দিলেও কৃষকদের এতে কোন উপকার হয় না।
চাটখিল উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বেনজির আহম্মেদ জানান, এবার নির্ধারিত সময়ের আগেই ইরিধান রোপন সম্পন্ন হলেও এতে কোন ক্ষতি হবে না। ধানের সঠিক পরিচর্যা এবং সময়মতো সার প্রয়োগ করতে হবে। এতে করে ফসল উৎপাদনে লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত হবে।
Leave a Reply