সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
চাটখিল (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশা পাড়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে যুবদল নেতা আমজাদ হোসেনকে গুলিকরে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের স্ত্রী স্বপ্না আক্তার বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪-৫ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যাক্তিকে আসামী করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সোনাইমুড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলায় নিহতের শ্যালক কেশবপুর গ্রামের পারভেজকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগটি হত্যা মামলা হিসেবে নথি ভুক্ত করে। পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার তুলাচারা গ্রামের সন্ত্রাসী জাফর (২৪) ওরফে রাডুকে নোয়াখালীর একটি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেফতার করেছে।
পূর্ব শত্রুতার জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আমিশা পাড়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক আমজাদ হোসেনকে কেশবপুর গ্রামের বাড়ীর পাশে সালাহ উদ্দিনের চা দোকান থেকে সন্ত্রাসী মোহনের নেতৃত্বে ১৪-১৫ জন অস্ত্রধারী ধানুপুর মাঠে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে গুলিকরে ও পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। নিহতের মরদেহ গ্রামের বাড়ীতে পৌছালে গ্রামের লোকজন ও প্রতিবেশিরা তাকে এক নজর দেখার জন্য লাশের পাশে ভিড় জমান। এসময় নিহতের স্ত্রী স্বপ্না আক্তার ও তার দুই ছেলে এক মেয়ে সহ স্বজনদের কান্নায় এলাকায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। বাদ আছর জানাজা শেষে তার মরদেহ পরিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়। নিহতের স্ত্রী স্বপ্না আক্তার তার স্বামীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি দাবি করেছেন।
এদিকে সোনাইমুড়ী উপজেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট সেলিম শাহী অভিযোগ করে বলেন রাজনৈতিক প্রতি হিংসার বষিভুত হয়ে আমজাদকে সরকার দলীয় লোকজন প্রকাশ্য দিবালোকে একটি চা দোকান থেকে তুলে নিয়ে তাকে হত্যা করেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েকদিন আগে স্থানীয় আমিশা পাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি পারভেজের নেতৃত্বে আমজাদের বসত বাড়ীতে রাতের আধারে হামলা ও তাকে মারধর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন এ হত্যা কান্ডের পেছনে পারভেজের হাত রয়েছে। এ ব্যপারে কথা বলার জন্য পারভেজের ব্যবহৃত মুঠো ফোনে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। সোনাইমুড়ী উপজেলা যুবদলের দাবী রাজনৈতিক কারনে আমজাদকে সরকার দলীয় লোকজন গুলি করে হত্যা করেছে। সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের যুবদলের সভাপতি এডভোকেট সেলিম শাহীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন শ^শুর বাড়ীর লোকজনের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই আমজাদ হোসেন খুন হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতির কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে তার দাবী।
এ ব্যাপারে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) দীপক জ্যোতি খীসা বলেন এ হত্যা কান্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক নেই। নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই পারভেজের সাথে তার ভগ্নিপতি যুবদল নেতা আমজাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের জের ধরেই এ হত্যা কান্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। মামলায় পারভেজকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। এর পরেও পুলিশ খুনের প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে। পুলিশের একাধিক টিম খুনিদের গ্রেপ্তার করতে মাঠে রয়েছেন। এ খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
Leave a Reply