সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন
ডেইলি চাটখিল খবর ডেস্ক:
বার বার জ্ঞান হারিয়ে মুর্ছা যাচ্ছেন, প্রলোপ বকছেন, কিছুই খাচ্ছেন না রুমানা আক্তার মুন্নি (২৬), তার অবস্থা আশংকাজনক। তার জমজ ৩ সন্তান নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলা সদরে অবস্থিত চাটখিল স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই সাথে মারা গেছে। এ মৃত্যু নিয়ে নানান ধরনের অভিযোগ রয়েছে, এই ৩ শিশুর মৃত্যু চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা নাকি ক্যানোলার মাধ্যমে মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন প্রয়োগ অথবা ইনজেকশনের সাথে বিষাক্ত কোন উপাদান ছিলো কি-না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ৩ শিশুর মৃত্যু হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১ জনের মৃত্যুর সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ নিয়ে মৃত ৩ শিশুর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। লোকজনের মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার ২নং রামনারায়নপুর ইউনিয়নের পশ্চিম রামনারায়নপুর গ্রামের আমিনমদের বাড়ির প্রবাসী রাশেদের স্ত্রী মুন্নি।
জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই ঢাকার আদদ্বীন হাসপাতালে মুন্নির ৩ সন্তানের জন্ম হয়। এদের নাম রাখা হয় আয়েশা, ফাতেমা ও মরিয়ম। মুন্নি সুস্থ্য হয়ে তার সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। গত শনিবার তাদেরকে চিকিৎসার জন্য চাটখিল স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার মিজানুর রহমান চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ২ দিন পর এদেরকে চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে ডাক্তার মিজানুর রহমান ওদেরকে হাসপাতালে ভর্তি না করে আবারও চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দেন। অবশেষে বুধবার রাতে এ ৩ শিশু অসুস্থ্য হলে চাটখিল স্কয়ার হাসপাতালে এনে ৯শত টাকা চিকিৎসা ফি এবং ৩শত টাকা ভর্তি ফি দিয়ে হাসপাতালের ২০২ নং রুমে ভর্তি করা হয়।
রোগীদের হাসপাতালে এনে ভর্তি করানো এবং তাদের সাথে থাকা মুন্নির বোন সালেহা বেগমের সাথে শুক্রবার সকালে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ভর্তির পর ৩ শিশুকে হাসপাতালের ৩য় তলার ও.টি রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার মিজানুর রহমানের চিকিৎসা পত্র অনুযায়ী নার্স প্রথমে ক্যানোলা লাগিয়ে ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। এরপর থেকে ৩ শিশু বিকটভাবে কান্না শুরু করেন। টানা আড়াই থেকে তিন ঘন্টা কান্নার প্রথমে আমেনা মারা যায়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের নিকট থেকে চার হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। কিন্তু মৃত্যুর সনদ দেয় নাই। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় অন্য দুই শিশু ফাতেমা এবং মরিয়ম মারা যায়। এরপর তারা ৩ শিশুকে বাড়িতে এনে আমিনমদের বাড়ির পূর্ব পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে। বিষয়টি ধামাচাপা থাকলেও এক সাথে ৩ শিশুর কবর এবং মুন্নির অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মাসুদ হাসপাতালে ১জনের মৃত্যুর সত্যতা স্বীকার করেছেন।
ডাক্তার মিজানুর রহমান জানান, ৩ শিশুই অপরিনত ও ওজনে কম ছিলো। এদের অবস্থাও খারাপ ছিলো, কোথাও পাঠানোর সুযোগ ছিলো না। এরা ডায়েরিয়া, সেপটিসেনিয়ায় আক্রান্ত ছিলো।
থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এই ব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
Leave a Reply