সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন
গুলজার হোসেন সৈকত, চাটখিল (নোয়াখালী):
সরকারি নির্দেশ থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার খাম খেয়ালিপনা ও গাফিলতির কারণে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার প্রধান শিক্ষক তাদের পাপ্য টাইম স্কেল ৪ বছরেও পায়নি। এতে করে তারা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শিক্ষকদের ন্যায্য পাওনা দেওয়ার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বার বার অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানালেও অর্থ মন্ত্রণালয় অজ্ঞাত কারণে এখন পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। এতে করে প্রধান শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য পাওনা না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদেরকে ৩য় শ্রেণি থেকে ২য় শ্রেণির কর্মকর্তা করার দাবিতে তাদের দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করার পর তাদের সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণির কর্মকর্তা ঘোষণা করেন এবং একই দিন এই ব্যাপারে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু আজ অবদি তাদেরকে ২য় শ্রেণির স্কেল দেওয়া হয়নি। ফলে তারা ৩য় শ্রেণির কর্মচারীই রয়ে গেছেন।
এদিকে ২০১৫ সালে জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণার সরকারি প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ইং এর আগ পর্যন্ত যে সকল সরকারি কর্মচারী টাইম স্কেল প্রাপ্য হয়েছেন তা দেওয়ার জন্য সরকার নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশ অনুযায়ী সকল বিভাগের কর্মচারীরা টাইম স্কেল পেলেও কেবলমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়। সারাদেশে অল্প কয়েকটি উপজেলায় প্রধান শিক্ষকরা টাইম স্কেল পেলেও প্রায় ৯০% শিক্ষক এখনও তাদের প্রাপ্য টাইম স্কেল পায়নি। এ সকল উপজেলার হিসাবরক্ষক অফিসগুলো প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণির কর্মকর্তার অযুহাত দেখিয়ে তাদেরকে টাইম স্কেল দিচ্ছে না। এ বিষয়টি নিয়ে সারাদেশ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই জটিলতা দুর করে প্রধান শিক্ষকদের টাইম স্কেল দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি সার্কুলার জারি করার জন্য বারবার অনুরোধ করেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় এখনও পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
এই ব্যাপারে অর্থ সচিবের একান্ত সচিব মোঃ হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বাস্তবায়ন শাখায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।বাস্তবায়ন শাখায় বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মোজাম্মেল হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, যেখানে প্রধান শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণির কর্মকর্তা ঘোষণা করেন, সেটা বাস্তাবায়ন না হওয়ায় এখন সেই ঘোষণা শিক্ষকদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ প্রধান শিক্ষকরা ৩য় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে যে টাইম স্কেল প্রাপ্য এখন তাও পাচ্ছেন না। এতে করে সারাদেশে হাজার হাজার প্রধান শিক্ষক লাখ লাখ টাকার আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
Leave a Reply