সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন
গুলজার হোসেন সৈকত, চাটখিল (নোয়াখালী):
চাটখিল উপজেলার চাটখিল পি.জি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও চাটখিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পুনঃ ভর্তির নামে চলছে জমজমাট বাণিজ্য। গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে এই বাণিজ্য চললেও এইগুলোর দেখার কেউ নেই। এই ব্যাপারে অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও তারা তা নিরবে সয়ে যাচ্ছেন। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে এই ব্যাপারে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যায় না। বরং অভিযোগকারীকে প্রতিষ্ঠানের রোশানলে পড়তে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাটখিল পি.জি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পুনঃ ভর্তিসহ বিভিন্ন খাত দেখিয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম, ৭ম থেকে ৮ম শ্রেণিতে প্রমোশন প্রাপ্তদের কাছ থেকে ১ হাজার ৮শত পঞ্চাশ টাকা এবং ৮ম থেকে ৯ম, ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণিতে প্রমোশন প্রাপ্তদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯শত পঞ্চাশ টাকা বিনা রশিদে আদায় করা হয়েছে। এই হিসাবে দেখা যায় মোট ৫২৩ জন প্রমোশন প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা বিনা রশিদে আদায় করা হয়।
একইভাবে চাটখিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২২৮ জন প্রমোশন প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিনা রশিদে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া চাটখিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদেরকে প্রমোশন দিতে আরো অতিরিক্ত প্রতি বিষয়ের জন্য ৫ শত টাকা হারে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই দুই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ করলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এই দুইটি প্রতিষ্ঠান এইভাবে টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করছে। এসব ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয় না। তাই তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবী জানান।
এই ব্যাপারে বিদ্যালয় দুইটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কামাল উদ্দিন ও শামছুন নাহার এর সাথে যোগাযোগ করলে তারা উভয়ই টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনা রশিদে টাকা আদায় করার বিধান আছে কি-না? না থাকলে প্রতিবছর আপনারা এইভাবে টাকা আদায় করছেন কেন? এ প্রশ্নের জবাবে তারা উভয়ই কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এই ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোঃ গোলাম ফারুকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এইভাবে বিনা রশিদে টাকা আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ। যারা এই কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply