সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন
গুলজার হোসেন সৈকত, চাটখিল (নোয়াখালী):
নোয়াখালী জেলার চাটখিল এবং সোনাইমুড়িতে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোন লক্ষণ দেখা না দিলেও এর প্রভাবে জনজীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এ সুযোগে এক শ্রেণীর কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পরিকল্পিতভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে করে বিভিন্ন শ্রেণীর লোকজনের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা ও দুর্ভোগ এর সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই দুই উপজেলার বিভিন্ন মসজিদগুলো থেকে এ রোগ থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য মাইকে বিভিন্ন দোয়া পড়ে শোনানো হচ্ছে এবং এ দোয়াগুলো পড়ে বেশি বেশি করে মোনাজাত করার আহবান জানানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক শ্রেণীর লোক ভ‚য়া অপপ্রচার চালিয়ে লোকজনের মাঝে আতংক সৃষ্টি করছে। প্রত্যেকটি হাট-বাজারে লোকজনের সমাগম কমে গেছে, তবে মুদি দোকানগুলোতে লেগে আছে ক্রেতাদের উপছে পড়া ভীড়, রাস্তা-ঘাটেও লোকজনের চলাচল কম, অনেকে মুখে মাস্ক ব্যবহার করছে। সিএনজি-অটোরিক্সাসহ হালকা যানবাহনে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে।
গত ১৬ই মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পর হাট-বাজারে চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সংকট এবং দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশংঙ্কায় লোকজন একসাথে ২-৩ মাসের চাল, ডাল, আটা, পিয়াজ, চিনি, লবনসহ অন্যান্য নৃত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেশি বেশি করে ক্রয় করে বাড়িতে নিয়ে মজুত করছে।
প্রত্যেকটি হাট-বাজারে অতিরিক্ত মূল্যে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করছে দোকানীরা। গত ৪-৫ দিনে প্রতি বস্তা চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৪-৫শ টাকা, কাচা শাকসবজিসহ অন্যান্য দ্রব্যমূল্যের একই অবস্থা। তবে লোকজন হাট-বাজারে কম আসায় হোটেলগুলোতে বিক্রি অনেক কমে গেছে। মুদি দোকান, কাঁচা শাকসবজি, ঔষধের দোকান ছাড়া কসমেটিক্স, জুতা, গার্মেন্টস দোকানে বেচা-কেনা নাই বললেই চলে।
চাটখিল বাজারে দিদার কথ ষ্টোরের স্বত্ত¡াধিকারী দিদার হোসেন জানান, প্রায় দোকানে গত ১ সপ্তাহে কোন বেচা-কেনা নেই, খিলপাড়া বাজারের নুর আলম ট্রেডার্সের মালিক নুর আলম বিপ্লব চালের দাম বৃদ্ধির সত্যতা স্বীকার করে জানান, তার দোকানে গত কয়েকদিন থেকে ক্রেতাদের উপছে পড়া ভীড় লেগেই আছে, বিক্রি হচ্ছে পূর্বের থেকে কয়েকগুন বেশি। ক্রেতাদের ভীড়ে মালামাল বিক্রী করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজারে আসা শংকরপুর গ্রামের মনির হোসেন জানান, হঠাৎ করেই চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এগুলো নিয়ন্ত্রন এবং দেখার কেউ নেই। তাছাড়া ২০-২৫ টাকার মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২৫ টাকা। করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় দুইটি আইসোলেশন বেড রাখা হয়েছে, লোকজনকে শতর্কতার জন্য প্রতিনিয়ত মাইকিং করা সহ বিভিন্ন প্রচার প্রচারনা করা হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডা. খন্দকার মোস্তাক আহম্মেদ জানান, করোনা ভাইরাসে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে এ রোগ চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সামগ্রীর কিছুটা স্বল্পতা রয়েছে। তিনি আরো জানান, বিদেশ থেকে কেউ আসলে তাদের সাথে তিনিসহ স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন দেখা করে কথা বলতে গেলে মাস্ক ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া অন্যান্য লোকজনের মাস্ক ব্যবহার করা প্রয়োজন নেই। চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম জানান, আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাজারগুলো মনিটরিং করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
Leave a Reply