সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
গুলজার হোসেন সৈকত, (নোয়াখালী):
“দৈনিক নোয়াখালী” প্রতিদিন সম্পাদক ও নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং নোয়াখালী সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল আনোয়ার নোয়াখালীর জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও বিত্তবানদের উদ্দেশ্যে স্যোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে ‘নিষিদ্ধ খোলা চিঠি’ শিরোনামে এক স্ট্যাটাসে নোয়াখালীতে কর্মরত সম্পাদক-সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। নিম্নে স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:-
আসসালামু আলাইকুম।
জনপ্রতিনিধি রাজনীতিবিদ ও সমাজের বিত্তশালীরা। করোনা ভাইরাসে পৃথিবী আজ কাবু। পৃথিবীর ধনী ও সম্পদশালী রাষ্ট্রের অনেক প্রভাবশালীরা এ রোগে আক্রান্ত। আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস পিছিয়ে নেই। দিনদিন গাণিতিক হারে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। সপ্তাহ তিনেক ধরে আমাদের জনপ্রতিনিধি রাজনীতিবিদ ও সমাজের বিত্তশালীরা ত্রাণ বিতরণ করে যাচ্ছেন। সরকার ও তার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন যাতে কোন মানুষ যেন না খেয়ে থাকে। ‘৭৪-এর মত চুরির হিড়িক পড়েছে ২০২০ সালেও। জনবান্ধব প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান কিংবা হুংকারকে কেউ যেন আমলেই নিচ্ছেন না। চলছে খেলা হরিলুটের। একজন সংসদ সদস্য আমাকে আক্ষেপ করে বলেছেন, এবারে সরকারি আমলাদের বিরুদ্ধে ত্রান বা চাউল চুরির অভিযোগের চেয়ে জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে বেশি। ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকারের বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ রাষ্ট্র হয়ে গেছে। জানিনা প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়। আমি সারাদেশের কথা বাদ দিয়ে নোয়াখালীর কথা বলব। নোয়াখালীতেও ব্যাপকহারে ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে। উপরওয়ালাই জানেন কে কি পরিমাণ ত্রান দিচ্ছেন। টিভির সংবাদে আজ দেখলাম লক্ষীপুরের এক ইউনিয়নের লোকজন অভিযোগ করছে তাদের চেয়ারম্যান তিনজনকে চাউল দিল আর এ চাল দেওয়ার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে চলে গেল। এমন যদি হয় তাহলে দুর্ভাগা নোয়াখালীবাসী। নিম্নবিত্ত উচ্চবিত্ত দুজনেই চলছে। কেউ ত্রাণের সহায়তা আর কেউ নিজের অর্থে। কিন্তু যেসব জনপ্রতিনিধিরা সমাজসেবকরা আজ ত্রাণ দিচ্ছেন তাদেরকে বছরের পর বছর জনগণের সামনে জাতির সামনে তুলে ধরেছে সাংবাদিকরা। বহু নেতা আছেন যাদের আজকের অবস্থানের জন্য প্রথম দাবিদার সাংবাদিকরা। তারা কিন্তু ত্রাণ বিতরণের সময় সাংবাদিকদের কথা বেমালুম ভুলে গেছেন। নোয়াখালীতে যদি আমি জেলা শহর এর কথা বলি এখানে সম্পাদক-সাংবাদিক মিলিয়ে বড়জোর ১০০ হবে। ১০০ জনের মধ্যে আবার ২০ জন আছে স্বাবলম্বী। এই ২০ জনের গাড়ি বাড়ী রয়েছে। বাকি ৮০ জনের কথা যদি জনপ্রতিনিধিরা একবার চিন্তা করত, তাহলে বছরের পর বছর সাংবাদিকরা তাদের কর্মের মূল্যায়ন পেত। সাংবাদিকরা আপনার প্রচারণা করেছে, পক্ষে লিখেছে এজন্য আজকে আপনি নেতা। কামিয়েছেন কমিশন বাণিজ্য টেন্ডারবাজি থেকে পাহাড় সমান অর্থ, সব সাংবাদিকদের কাছেই আছে কিন্তু এসব তথ্য। ভুলে যাবেন না যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী যদি করনায় আক্রান্ত হয়, কিংবা কানাডার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী, তাহলে এমন এক সময় আসবে, আজকের এই পেক্ষাপটে সাংবাদিকদের অবমূল্যায়নের কারণে, আপনিও পড়তে পারেন সাংবাদিকদের মহা ত্রাসের কবলে। আমি আমার কথা বলছি না, বলছি নোয়াখালী সম্পাদক-সাংবাদিকদের কথা। আমার যদি সহযোগিতা লাগে আমাকে সহযোগিতা করবে পুরো নোয়াখালীবাসী। সবিনয় অনুরোধ আজকের নোয়াখালীর জনপ্রতিনিধি সমাজসেবক বিত্তশালীদের প্রতি, অসহায় সম্পাদক-সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ান। আপনি সহযোগিতার মানসিকতা থাকলে আমাকে বলুন আমি আপনাকে তালিকা দেবো। এমন কাউকে তালিকা প্রণয়নের দায়িত্ব দিবেন না যিনি ফখরুল ইসলাম মন্টু কর্তৃক সাংবাদিকদের জন্য প্রদত্ত ২০০ ত্রাণ সহায়তার প্যাকেট নিজেরা মেরে দিবেন ২/৪ জনে মিলে। আমার এই লেখাটি নোয়াখালীর অসহায় সম্পাদক সাংবাদিকদের জন্য। কারো গায়ে লাগলে আমার কিছু বলার নেই, কারণ লেখাটি নিষিদ্ধ ছিল। আপনি পড়লেন কেন?
Leave a Reply