সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন
জাপানে প্রচণ্ড কাজের চাপে কর্মচারীরা মারা যাচ্ছেন; এমনকি চাপ শামলাতে না পারায় অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। শ্রমিক-কর্মচারীরা যেন মাসের প্রথম সোমবার সকালে ছুটি উপভোগ করতে পারেন দেশটির সরকার এখন সেই ব্যবস্থা করছে।
শাইনিং মানডে নামের এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, জাপানি অর্থ মন্ত্রণালয় নতুন এক প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে; যেখানে ওভারটাইম কমানো এবং কাজ ও অবসরের মধ্যে ভারসাম্য থাকবে।
গত বছর সরকার প্রিমিয়াম ফ্রাইডে নামে আরেকটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে; যেখানে শুক্রবার বিকেল ৩ টার মধ্যে কর্মীদের ছুটি দেয়া হয়। এটা করা হয়েছে যাতে ওই সময়ে তারা বেড়াতে যেতে পারেন কিংবা কেনাকাটা করতে পারেন।
মন্ত্রণালয় বলছে, এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের মধ্যে তারা একটি জরিপ চালিয়েছে যেখানে ৩০ শতাংশ কর্মীকে সোমবার সকালে ছুটি দেয়া হয়েছিল। ওই জরিপে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ার পর সরকার জাপানের কর্পোরেট জগতের জন্য একটি প্রস্তাব তৈরি করছে।
তবে এই প্রস্তাব কোম্পানিগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক নয়। জাপানে কর্ম-সপ্তাহের মেয়াদ কমানোর প্রচেষ্টার পেছনে রয়েছে জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে চরম উদ্বেগ। দেশটিতে ২০১৬ সালের ১০ হাজার কর্মচারীর ওপর চালানো একটি জরিপে দেখা গেছে ২০ শতাংশ কর্মচারী প্রতিমাসে ৮০ ঘণ্টা ওভারটাইম করেছেন।
তবে ১৯৬০-এর দশক থেকে জানা যায় যে দীর্ঘ সময় কাজের ফলে হৃদযন্ত্র এবং মস্তিষ্কে নানা অসুখ হয়। জাপানি ভাষায় এ ধরনের মৃত্যুর নাম কারোশি, যার অর্থ অতিরিক্ত পরিশ্রমে মৃত্যু।
সরকারিভাবেই কারোশিতে আক্রান্ত হয়ে ২০১৭ সালে ২৩৬ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়েছে। এর বাইরে কারোজিসাৎসু অর্থাৎ মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে কর্মীরা আত্মহত্যা করছেন। একই বছর এধরনের ২৩৬টি আত্মহত্যার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী সাওয়াকো শিরাহাসে বলছেন, এটা জাপানের দীর্ঘ দিনের এক সমস্যা। কর্পোরেট সংস্কৃতি এবং কাজের ধারার সাথে এসব সমস্যার গভীর যোগাযোগ রয়েছে।
Leave a Reply