সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে–বিদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সকলে সেটাই মানি আর বাংলাদেশ বিশ্বে সেটার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রত্যেকটা উৎসবে সবাই ভাইবোনের মতো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা এই উৎসবটা উদ্যাপন করে যাই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষষ্ঠীর দিনে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে এসে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতাসংগ্রামে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা মুসলমানরা শুধু নয়, আমাদের সবধর্মের মানুষ—হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকলে মিলেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে এ দেশ স্বাধীন করে গেছেন। বাংলাদেশ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এবং এই বাংলাদেশে জাতি–ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে সকলে যার যার অধিকার নিয়েই বসবাস করবে, তাদের ধর্মকর্ম পালন করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশকে আমরা সকলে একসঙ্গে গড়ে তুলতে চাই। বাংলাদেশ উন্নত হোক, সমৃদ্ধিশালী হোক, দারিদ্র্যমুক্ত এবং ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ হোক—এটাই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। আমি এটুকু বলতে পারি, আমি বাবা, মা, ভাই—সব হারিয়েছি এবং আমরা দুটি বোন বেঁচে আছি। আমাদের জীবনের একটাই লক্ষ্য—এই বাংলাদেশটাকে আমরা গড়ে তুলব। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কখনো ব্যর্থ হতে পারে না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজ আমরা আনন্দিত, সারা বাংলাদেশেই পুজো হচ্ছে এবং প্রতিবছরই পুজোর সংখ্যা বাড়ছে। প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মন্ডপে পুজো হচ্ছে’ (সারা দেশে ৩১ হাজার ২৭২টি পূজামন্ডপে পূজা হচ্ছে)। তিনি বলেন, ‘আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকলেই দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে এখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় জনগণও সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।’ তিনি সারা বাংলাদেশে পূজা অনুষ্ঠানে কর্মরতদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি এই উৎসব যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়, সেই কামনাও করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী রামকৃষ্ণ মিশন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে যান। সেখানে মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরকে দেড় বিঘা জমি দিলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ ৬০ বছরের পুরোনো (ভূমি) সমস্যা মিটিয়ে সোমবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরকে দেড় বিঘা জমি দিয়েছেন।
পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি বাসসকে বলেন, ‘মন্দিরের দীর্ঘ ৬০ বছরের সমস্যা মিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ এই জমি আমাদের দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী আমাদের এই জমি প্রদান করলেন।’
চ্যাটার্জি দীর্ঘ দিনের সমস্যা সমাধানে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরকে জমি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
Leave a Reply