সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চাটখিলে খালে মিললো ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হওয়া ৬১২ বুলেট মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাকে আড়াল করার জন্যই পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে লিপ্ত টেকনাফের করিম মেম্বার চাটখিলে ব্যবসায়িকে অপহরন-চাঁদা দাবি -থানায় মামলা চাটখিলের সাবেক এমপি এইচ এম ইব্রাহিমসহ আওয়ামীলীগের ২৯ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা অপারেশন ক্লিন লীগ’ ঘোষণার দাবি গণঅধিকার পরিষদ নেতার বন্যা দুর্গতদের মাঝে এন আর বি ব্যাংকের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চাটখিলে কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্র লীগের হামলার অভিযোগ টাকা নিয়ে আসামি ছেড়ে দেওয়ায় পুলিশের এস আই ক্লোজড সোনাইমুড়ীতে মোটরসাইকেল চুরি নিয়ে দ্বন্দ্ব, যুবককে গুলি করে হত্যা
কোন পদ্ধতিতে কর্মী প্রেরণ, আলোচনার পর সিদ্ধান্ত

কোন পদ্ধতিতে কর্মী প্রেরণ, আলোচনার পর সিদ্ধান্ত

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত চলমান সংকট নিরসনে দেশটির উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ২৬ অক্টোবর ঢাকা আসছেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে চলমান সংকট নিরসন হবে।

দেশটিতে কর্মী প্রেরণে কার্যকর একটি পদ্ধতি খুঁজে বের করবেন ঢাকা সফরে আসা প্রতিনিধিদলটি। এছাড়া পাইপলাইনে আটকে থাকা জি-টু-জি প্লাসের ভিত্তিতে ৭০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সেদেশে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এতদিন জি-টু-জি প্লাসের ভিত্তিতে অনলাইন নিবন্ধনের মাধ্যমে দেশটিতে কর্মী পাঠিয়ে আসছিল বাংলাদেশ।

একতরফা ও অনৈতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ ওঠার পর গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ বাতিল করে দেশটি। ফলে ওই ৭০ হাজার কর্মীর মালয়েশিয়া যাওয়াও প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুই দেশের মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠকের পর ওই অনিশ্চয়তা দূর হয়। ৪ অক্টোবর দূতাবাস থেকে তাদের নিয়োগ সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র দেয়া হয়। এসব কর্মী এখন ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মালয়েশিয়া যেতে পারবেন।

২৫ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত নতুন কোনো পদ্ধতি নির্ধারণ এবং মালয়েশিয়ায় অনিয়মিত হয়ে পড়া বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়মিত করার বিষয়টিও গুরুত্ব পায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে ‘বায়ো রিক্রুটমেন্ট’ পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) দেয়া প্রস্তাব বিবেচনা এবং দ্রুততম সময়ে কীভাবে নতুন নিয়োগ পদ্ধতি কার্যকর করা যায় সে বিষয়ে গঠিত কমিটিকে পদক্ষেপ নিতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহান নির্দেশনা দেন। নতুন পদ্ধতিতে একজন কর্মীর সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ হতে পারে।

সর্বোচ্চ কত টাকায় একজন কর্মী বিদেশ যেতে পারবেন সেই বিষয়ে বায়রার পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের দেয়া প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে বিদেশে কর্মী পাঠাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ৮ অক্টোবর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহানের নেতৃত্বে ‘বিদেশে শ্রমিক প্রেরণে অভিবাসন ব্যয় কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নতুন পদ্ধতিতে কীভাবে কম টাকায় এবং বিশৃঙ্খলা ছাড়াই বিদেশে কর্মী পাঠানো যায় সে বিষয়ে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরোর ডিজিকে নির্দেশ দেয়া হয়।

বৈঠক প্রসঙ্গে বায়রা মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, আমরা বিদেশে শ্রমিক পাঠাতে ‘বায়ো রিক্রুটমেন্ট’ পদ্ধতি সম্পর্কে বলেছি। মন্ত্রণালয় আমাদের প্রস্তাব দেখার জন্য জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরোর ডিজিকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটিতে মন্ত্রণালয়, বিএমইটি ও বায়রার দুজন সদস্য থাকবেন। প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী মহোদয়ও আমাদের দেয়া প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, এতদিন আমরা যে ধরনের চিন্তা করেছি তার সঙ্গে বায়রার দেয়া প্রস্তাবের ৯৫ শতাংশ মিল রয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে অথবা এরও আগে মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশের জন্য একই পদ্ধতিতে অভিবাসন ব্যয় কমানোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে কত টাকা অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে, জানতে চাইলে বায়রা মহাসচিব বলেন, আমরা মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ এক লাখ ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছি। এ টাকায় সব খরচ বাদ দিয়ে আমাদের ১৫-২০ হাজার টাকা লাভ থাকবে।

বায়ো রিক্রুটমেন্ট পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, একজন বিদেশগামী কর্মী জেলা জনশক্তি অফিসে অনলাইন পদ্ধতিতে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করবেন। তিনি যে দেশে যেতে ইচ্ছুক ওই দেশের অভিবাসন ব্যয় কত আছে, তা তিনি নিজেই স্ক্রিনে দেখতে পাবেন। সেই মোতাবেক টাকা তিনি প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকে জমা করবেন। এরপর ফিঙ্গারপ্রিন্ট, মেডিকেল, ভিসাসহ অন্যান্য প্রসেসিং শেষ হলে গন্তব্যর উদ্দেশে পাড়ি জমাবেন। মোটকথা, দালাল ছাড়াই কর্মীর বিদেশ যেতে কোনো বাধা থাকবে না।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় কোন পদ্ধতিতে কর্মী যাবে; তা নির্ধারণে চলতি মাসের শেষের দিকে দেশটির উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করবে। তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর ও অতিরিক্ত সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম জানান, মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে আমরা কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াটি হবে প্রতিযোগিতামূলক এবং এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অভিবাসন ব্যয় কমানো এবং আইনসম্মত উপায়ে অভিবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।

আগের পদ্ধতি বাতিল হওয়ার পর নতুন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার আগে অন্তর্বর্তীকালীন পদ্ধতি অনুসরণ করবে দুই দেশ। তবে এ প্রক্রিয়ার আওতায় কর্মী নিয়োগ শুরুর আগে এমওইউ (দুই দেশের মধ্যে হওয়া সমঝোতা স্মারক) সংশোধন করা হবে। এই সংশোধনীর জন্য দুই দেশের মন্ত্রিসভার সম্মতি এবং আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে অন্তত কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলেও জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2018 dailychatkhilkhobor.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com