সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চাটখিলে খালে মিললো ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হওয়া ৬১২ বুলেট মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাকে আড়াল করার জন্যই পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে লিপ্ত টেকনাফের করিম মেম্বার চাটখিলে ব্যবসায়িকে অপহরন-চাঁদা দাবি -থানায় মামলা চাটখিলের সাবেক এমপি এইচ এম ইব্রাহিমসহ আওয়ামীলীগের ২৯ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা অপারেশন ক্লিন লীগ’ ঘোষণার দাবি গণঅধিকার পরিষদ নেতার বন্যা দুর্গতদের মাঝে এন আর বি ব্যাংকের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চাটখিলে কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্র লীগের হামলার অভিযোগ টাকা নিয়ে আসামি ছেড়ে দেওয়ায় পুলিশের এস আই ক্লোজড সোনাইমুড়ীতে মোটরসাইকেল চুরি নিয়ে দ্বন্দ্ব, যুবককে গুলি করে হত্যা
স্টপেজে বাস থামছেই না

স্টপেজে বাস থামছেই না

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাসে যাত্রী ওঠানো-নামানোর জন্য নতুন করে বাস স্টপেজ করে দেওয়া হয়েছে। বসানো হয়েছে সাইনবোর্ড। কিন্তু নির্ধারিত স্থানে কোনো বাস থামছে না। অন্যদিকে যাত্রীরাও থাকে না যাত্রী ওঠানোর স্থানে। ফলে বিশৃঙ্খলভাবে প্রতিযোগিতা করে যেখানে-সেখানে থেমে যাত্রী ওঠাচ্ছে বাসগুলো। কোথাও আবার বাস থামানোর স্থানে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত স্কুটার রাখা।

দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন রুটে বাস থামানোর জন্য ১৫৫টি স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যাত্রীছাউনিও তৈরি করা হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, এসব স্থানে বাস থামে না। আর বাসচালকদের যুক্তি, যাত্রীরা যদি নির্ধারিত স্থানে থাকে, তাহলে তাঁরাও সেখানে বাস থামাবেন। যাত্রীদের অনেকে আবার অভিযোগ করেছেন, নির্ধারিত স্থানে নামতে চাইলেও নামানো হয় না।

পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু স্থান নির্ধারণ করে দেওয়াই সমাধান নয়, এক রুটে অনেক কোম্পানির বাস চললে সেখানে বাস স্টপেজ দিয়েও বাস থামানো যাবে না।

গত ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে প্রতিযোগিতা করে যাত্রী ওঠানোর সময় দুই বাসের রেষারেষিতে মারা যায় দুই কলেজশিক্ষার্থী। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময়ই ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি কমিটি করা হয়। গত ১৬ আগস্ট কমিটি ১৭টি নির্দেশনা জারি করে, যার মধ্যে নির্ধারিত স্থানে বাস থামানোর নির্দেশনাও আছে। এ নির্দেশনা না মানায় মামলাও করা হচ্ছে। কিন্তু এরপরও বাসকে নির্ধারিত স্থানে থামানো যাচ্ছে না।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) মোসলেহ উদ্দিন আহমদ বলছেন, নির্ধারিত স্থানে বাস থামানোর জন্য মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরাও বাধ্য করার চেষ্টা করছেন। ধীরে ধীরে উন্নতি হবে।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শুধু গতকাল মঙ্গলবারই রাজধানীতে নির্ধারিত স্থানে ট্রাফিক আইন না মানায় মামলা হয়েছে ৪ হাজার ৯৬৩টি। আর জরিমানা করা হয়েছে ৪২ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৫ টাকা। প্রতিদিনই কয়েক হাজার মামলা হয়।

গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, বিমানবন্দর সড়কের যে স্থানে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেখান থেকে ৩০ গজ দূরেই বাস থামানোর স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এর পরও প্রতিযোগিতা করে বাস থামানো হচ্ছে আগের জায়গাতেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিকাশ পরিবহনের এক চালক বলেন, ‘আমাদের কাজ যাত্রী নেওয়া। যাত্রী যদি এখান থেকে উঠতে চায়, তাহলে আমাদের কী করার?’

ডিএমপি নির্ধারিত স্থানের মধ্যে বাংলামোটর মোড়, আজিমপুর মোড়, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, শুক্রাবাদ, ধানমন্ডি ৪ নম্বর, মুগদা টিটিপাড়া দক্ষিণ, ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনের অংশ, মোহাম্মদপুরের মাদার কেয়ার বাস স্টপেজ, শ্যামলী বাস স্টপেজ, মিরপুরের এশিয়া সিনেমা হল বাস স্টপেজ, কাকলী রেলক্রসিং উত্তর-দক্ষিণ, উত্তরা হাউস বিল্ডিং, এয়ারপোর্টের পূর্ব ও পশ্চিমাংশ ঘুরে দেখা যায়, নির্ধারিত স্থানে বাস না থেমে উল্টো যেখানে–সেখানে যাত্রী ওঠানো হচ্ছে।

শাহবাগ এলাকায় বাস থামানোর স্থান নির্ধারণ করা আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পদচারী-সেতুর নিচে। কিন্তু সেখানে পার্ক করে রাখা হয়েছে হাসপাতালে আসা গাড়ি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। আর শাহবাগ মোড়ে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানো হচ্ছে। দুপুরে পার্ক করে রাখা গাড়ি থেকে চাঁদা ওঠাতে দেখা গেল সালাহ্উদ্দিন নামের এক আনসার সদস্যকে। নির্ধারিত স্থানে না থেকে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় মোড়ের অংশে।

শাহবাগ মোড় থেকে ফার্মগেটে যাওয়ার জন্য সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাইমুর ইসলাম। নির্ধারিত স্থানে না থেকে অন্য জায়গায় কেন? সাইমুরের উত্তর, ‘বাস এখানে থামে, তাই দাঁড়াইছি।’

একই দৃশ্য দেখা যায় কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারা মোড়ে। নির্ধারিত স্থানে বাস না থামানোয় গতকাল দুপুর পর্যন্ত সেখানে মামলা হয়েছে ৩৫টি। সার্ক ফোয়ারা মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট আনোয়ার কবির বলছিলেন, বাস যাতে নির্ধারিত স্থানে থামে, সে জন্য প্রতিদিনই শত শত মামলা হচ্ছে। কিন্তু পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, চালকদের মনে যাত্রী ওঠানোর প্রতিযোগিতা থাকলে বাস কোথায় থামল না থামল, তাঁরা সেটি দেখবেন না। তাঁরা দেখবেন কোথা থেকে বেশি যাত্রী ওঠানো যায়। এ জন্য রুট অনুযায়ী বাসগুলোকে কোম্পানির আওতায় আনতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2018 dailychatkhilkhobor.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com