সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন
চাটখিল প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সমস্যায় জর্জরিত। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত স্থানীয় রোগীরা। উপজেলার ৯ ইউনিয়ন ও চাটখিল পৌর সভায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ জনসাধারণের চিকিৎসায় একমাত্র সম্বল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি এই হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১০ পদ থাকলেও ৭টি পদই খালি পড়ে আছে দীর্ঘদিন থেকে।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ সহ শিশু ওয়ার্ডে ৩০/৩৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এইসব রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জরুরী বিভাগের চিকিৎসকই এদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন। কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সঠিক ও যথাসময়ে চিকিৎসা পাচ্ছেন না ভর্তি রোগীরা। আবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী নিয়ে হাসপাতাল আসলে চিকিৎসক না থাকায় জরুরী বিভাগ থেকে রোগী ভর্তি না করে জেলা সদরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে জনসাধারণের চরম ভোগান্তি পোড়াতে হয়। আবার রোগীর সাথে রোগীর সহযোগী ও স্বজনরা রোগী হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কারণ হাসপাতালটির সংস্কার কাজ দীর্ঘদিন থেকে করা হয়নি। ফলে টয়লেট, মেঝে ও দেওয়ালের রং উঠে গেছে। এতে শেওলার পাশাপাশি জীবানুদের আক্রমণ বেড়ে গেছে। এছাড়া হাসপাতাল এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকায় রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে ইতোমধ্যে কয়েকটি আপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: খন্দকার মোশতাক আহমেদ জানান, হাসপাতালটিতে কোন স্টোর রুম নেই। ফলে প্রয়োজনীয় ওষুধ হাসপাতালের বারান্দায় রাখতে হয়। এতে চলাচলের ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি বৃষ্টির পানিতে অনেক ওষুধ নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া হাসপাতালটির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১০টি পদ থাকলেও মেডিসিন,ইএনটি, কার্ডিওলজি, চর্ম, চক্ষু সার্জারী ও এনেসথেসিয়া সহ ৭টি পদই খালি পড়ে আছে দীর্ঘদিন থেকে। কেবলমাত্র শিশু, গাইনী অর্থোপেডিক বিভাগের ০৩ জন চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতালটি পরিচালিত হয়ে আসছে। চিকিৎসকের অভাবে রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা যাচ্ছে না বলে তিনি স্বীকার করেন। এছাড়া হাসপাতালটি ল্যাব ও প্যাথলজীতে আধুনিক মানসম্মত কোন ডিজিটাল যন্ত্রপাতি না থাকায় সঠিক রোগ নির্ণয় করাও সম্ভব হচ্ছে না। এসময় তিনি আরো জানান, বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সিভিল সার্জন সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের বরাবর অবহিত করা হলেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
সেবা গ্রহন করতে এসে প্রয়োজনীয় সেবা না করতে পেরে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৪ লাখ জনসাধারণের চিকিৎসার একমাত্র সম্বল সরকারি এই হাসপাতালের দুরবস্থা জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টিতে আসেনা। তাই এলাকাবাসী হাসপাতালটিতে জরুরী ভিত্তিতে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ, প্রয়োজনীয় সংস্কার, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং ল্যাব ও প্যাথলজীতে আধুনিক মানসম্মত ডিজিটাল যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য মন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply