শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ অপরাহ্ন
যুক্তরাষ্ট্রে শামীম ওসমানকে হেনস্তা, নোয়াখালীতে অভিযুক্ত বাদল মির্জার হামলা-ভাঙচু
সোনাইমুড়ী প্রতিনিধিঃ
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস শহরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে ভোট চোর ও বিভিন্ন বাজে মন্তব্য করে হেনস্তা করার অভিযোগে অভিযুক্ত যুবক বাদল মির্জার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে হামলাকারীদের বিষয়ে জানার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে জয়াগ ইউনিয়নের আমকি গ্রামের আমকি মিয়া বাড়িতে (বর্তমান চেয়ারম্যানের বাড়ি) এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বাদল মির্জা ওই বাড়ির আবু বাহারের ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জয়াগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আকবর বলেন, বাদল দেশে থাকার সময় রাজমিস্ত্রীর শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। ২০১২ সালে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। আফ্রিকা থেকে পরবর্তীতে তিনি আমেরিকা গেয়েছিলো বলে শুনি। আমেরিকায় গিয়ে নিজের নামের সাথে মির্জা পদবী ব্যবহার করে বাদল থেকে বাদল মির্জা হয়ে যান তিনি। দেশে তার বাবা-মা ও বড় ভাই হাসানুজ্জামান বিপ্লব থাকে। শামীম ওসমানের ঘটনার প্রতিবাদে সকালে ছাত্রলীগের কয়েকজন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী তার বসত ঘরে হামলা চালিয়েছে বলে লোকের মুখে ও ফেসবুকে দেখেছি। হামলার সময় বাদলের পরিবারের লোকজন ঘরে ছিল না।
তিনি আরও বলেন, রাজমিস্ত্রী কাজের পাশাপাশি তিনি বিএনপি সমর্থন করতেন। রাজমিস্ত্রীর কাজ করে পেট চালাতো সে কিসের রাজনীতি করবে। দেশে বিএনপির সমর্থক থেকে বিদেশ গিয়ে তিনি বিএনপির নেতা হয়ে গেছে এমনটা শুনলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুলাই স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র সফররত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে ভোট চোর ভোট চোর বলে হেনস্তা পরে তার সাথে বাকবির্তক করে সোনাইমুড়ীর বাদল। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই ঘটনার ভিডিও-ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনার সাথে সোনাইমুড়ীর বাদল জড়িত সনাক্ত হওয়ার পর স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর সূত্র ধরে শনিবার সকালে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ৫০-৬০টি মোটরসাইকেল নিয়ে একত্রিত হয়ে অভিযুক্ত বাদলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ করে। তবে বাদলের পরিবারের কেউ না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সুজন বলেন, একজন আওয়ামী লীগের নেতাকে এভাবে অপমান করা মানে আমাদের দলকে অপমান করা। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে সকালে আমি ও আমাদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল উদ্দিন সহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রায় ৫০-৬০টি মোটরসাইকেল নিয়ে প্রথমে বাদলের বাড়ির সড়কে ও সামনে বিক্ষোভ মিছিল করি। পরে প্রায় ৩০জন নেতাকর্মী তার বাড়িতে প্রবেশ করে। তবে বাদলের ঘরে তালা লাগানো ছিলো এবং পরিবারের কেউই ছিলো না। পরবর্তীতে লোকজন থেকে আমরা জানতে পারি আমাদের বিক্ষোভ মিছিল দেখে তারা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। নেতাকর্মীরা কয়েকটি পটকা ফাটিয়েছে এর বাইরে আর কিছু হয়নি।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক জিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বাদলদের ঘরের বাইরে লাঠি দিয়ে আঘাত আর কিছু ফটকার বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে কেউ আমাদের অবগত করেনি।
Leave a Reply