রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন
দেশে উন্নয়নের ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে। তবে এই কর্মযজ্ঞ কতটা নিয়মমাফিক অথবা স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে তা এক প্রশ্ন বটে। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলোর একটি বড় অংশের সঙ্গে অনিয়ম আর দুর্নীতি যেন লেপ্টে আছে।
রাজধানীর অভিজাত আবাসিক এলাকা গুলশানের হেলথ ক্লাব পার্কের কথাই ধরা যাক। বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের নামাঙ্কিত এই পার্কের উন্নয়ন কাজ হচ্ছে পুরনো ইট, রড ও নিুমানের মালামালের মাধ্যমে।
একটি প্রভাবশালী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কোনোকিছুরই তোয়াক্কা করছে না, তারা তাদের ইচ্ছামাফিক নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সচেতন এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেও সেই প্রতিবাদ অরণ্যে রোদনে পর্যবসিত হচ্ছে। এমনকি ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করলেও তারা উল্টো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানেরই পক্ষ নিচ্ছে।
গুলশান হেলথ ক্লাবের প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ের উন্নয়ন প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের আমলে। উদ্দেশ্য ছিল পার্কটিকে অনিন্দ্যসুন্দর করে গড়ে তোলা।
কিন্তু এই প্রকল্পটি নিয়ে ঠিকাদার কোম্পানিটি শুধু দুর্নীতিই করছে না, তাদের কর্মকাণ্ড এমন কিছু সমস্যা তৈরি করছে, যা পার্কটিতে আসা নাগরিকদের জন্য তৈরি করছে নানা উপদ্রব। ওয়াকওয়েতে তরল নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখার কারণে পড়ে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্তও হয়েছেন কেউ কেউ।
দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কীভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে, তার অন্যতম উদাহরণ হল গুলশান হেলথ ক্লাবের উন্নয়ন প্রকল্প। খোদ রাজধানীর একটি অভিজাত এলাকার উন্নয়ন প্রকল্পেই যেখানে প্রকাশ্যে দুর্নীতি হচ্ছে, সেখানে দেশের অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কী অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়।
প্রকৃতপক্ষে, ঠিকাদার কোম্পানিগুলো অদৃশ্য শক্তির প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোয় ব্যাপক দুর্নীতি করে যাচ্ছে। প্রভাবশালীরা যখন ঠিকাদারদের সঙ্গে গোষ্ঠীস্বার্থে মিলিত হয়, তখন দুর্নীতি-অনিয়মের প্রতিকার করা দুরূহ হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষের বাদ-প্রতিবাদ তখন তুচ্ছ।
গুলশান হেলথ ক্লাবের উন্নয়ন প্রকল্পে সবার দৃষ্টিগোচরেই পুরনো ইট, রড ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ এর প্রতিকার করা যাচ্ছে না। এর মানে কী দাঁড়ায়? উচ্চতর কর্তৃপক্ষ বলে কি কিছু আছে দেশে?
উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কর্তাব্যক্তিরাই বা নীরব কেন? তবে কি দুর্নীতির সঙ্গে তারাও সম্পৃক্ত? আমরা গুলশান হেলথ ক্লাবের চলমান উন্নয়ন কাজের ব্যাপারে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
Leave a Reply