সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, গত কয়েকদনি ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের) নানা রকম দুঃস্বপ্নে অস্থির ও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মানুষের বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্রকে হরণ করে যে শূন্যতার সৃষ্টি করেছেন তাতে ধেয়ে আসা প্রতিবাদী মানুষের টর্নেডোতে ভয় পেয়ে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা বেসামাল হয়ে পড়েছেন। তাই কখনও ভয়ের কথা বলছেন, কখনও ধমকের সুরে কথা বলছেন।
শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শিশু-কিশোররা রাস্তায় নেমেছিল নিরাপদ সড়কের দাবির আন্দোলনে। আবেগাপ্লুত অনেক স্লোগানে তারা মানুষের হৃদয়কে শুধু দোলায় দেয়নি বরং ঘুমন্ত বিবেককে জাগিয়েছে, কর্তব্যবোধ সম্বন্ধে সচেতন করেছে। এ আন্দোলনের সমর্থনকারীদেরকে বলা হচ্ছে উসকানিদাতা। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, ফেসবুক ব্যবহারকারী, রাজনৈতিক দল- যারা এ আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতারের হিড়িক চলছে।
তিনি বলেন, রিমান্ডে নিয়ে শেখানো বুলি স্বীকার করতে উৎপীড়ন করা হচ্ছে। বিশেষ করে ছাত্রীদের গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়া নজীরবিহীন। এ সংবাদ মানুষের শরীরে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে, ভয়াল আতঙ্কের সৃষ্টি করছে পড়ুয়াদের অভিভাবক ও দেশবাসীর মনে। সরকারি বর্বরতার দৃশ্য দেখে, গণতন্ত্র হরণের স্বৈরাচারি বিভৎস্যতা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে এক ভিন্ন রকমের প্রতিবাদ করেছে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের ছাত্র মুশফিক মাহবুব। তিনি তার কষ্টের কথা ফেসবুকে লিখে গেছেন।
রিজভী বলেন, আমরা ক্ষতিকর গুজবের পক্ষে নই, তবে প্রকাশ্যে হাতুড়ি দিয়ে ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাকে পা গুড়া করে পঙ্গু করে দেয়া এবং শহীদ মিনারে একজন ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করা কি গুজব? পুলিশ ও হেলমেটধারী সন্ত্রাসীদের একযোগে শিশু-কিশোর ও সাংবাদিকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া কি গুজব? এগুলোতো সবার সামনেই ঘটেছে। এদের কেন বিচারের আওতা থেকে দূরে রাখা হয়েছে?
বিএনপির এ নেতা বলেন, মূলত আওয়ামী লীগ অমানবিক নষ্ট বুদ্ধির দল। মিথ্যাচার আওয়ামী লীগের প্রথাগত টেকনিক। মুঢ় অহঙ্কারের কারণেই এদের পতন হয়। অবিলম্বে নিরাপদ সড়কের আন্দোলন ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে গ্রেফতার শিশু-কিশোর ও তরুণ ছাত্র-ছাত্রীদের মুক্তি দিতে হবে। তাদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তাদের রিমান্ডে নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের এ মুখপাত্র বলেন, গতকাল (শুক্রবার) সকাল থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদকে নোয়াখালির কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার মানিকনগর নিজ বাড়িতে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে দেশের সিনিয়র সিটিজেন বরেণ্য আইনজীবী ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদকে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। গতকাল দলীয় নেতা-কর্মীরা তার সাথে দেখা করতে গেলে তাদেরকে পুলিশ বাধা দেয় এবং তার বাড়ি ও বাড়ির সামনে থেকে ১০ জনকে আটক করে। আজও কোনো নেতাকর্মী তার সাথে দেখা করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রতিহিংসার শিকার তার প্রমাণ মিলছে কয়েকদিন পরপর প্রধানমন্ত্রীর উদ্ভট বক্তব্যে। বেগম জিয়াকে বন্দি করার জন্যই শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে অসত্য মামলায় সাজা দিয়েছে। এটা কোনো আইনি প্রক্রিয়া নয়, দেশনেত্রীকে আটকে রেখে আনন্দ লাভ করা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভূইয়া, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, নির্বাহী কমিটির সদস্য শামসুজ্জামান সুরুজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply