সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন
শিশুরা অনলাইনে যৌন নির্যাতনসহ বিভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনের অভাবে শিশুদের এই ঝুঁকি বাড়ছে। অনলাইনে শিশুদের যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য কোনো স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তৈরি করা হয়নি। এখন পর্যন্ত শিশুদের সুরক্ষায় সমন্বিত কোনো আইনও প্রণয়ন করা হয়নি।
আজ সোমবার ‘অনলাইনে শিশু যৌন হয়রানি প্রতিরোধ: আইনি পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আলোচকেরা এ কথা বলেছেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সভায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল’এর জ্যেষ্ঠ প্রভাষক সাইমুম রেজা তালুকদার শিশুদের হয়রানি বিষয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ এর পর্যালোচনা এবং বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট আইনে সাইবার অপরাধের সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শিশুদের সুরক্ষায় বিশেষ কোনো বিধান রাখা হয়নি।’
আলোচনায় আইন কমিশনের যুগ্ম জেলা জজ তাহসিন ইফতেখার বলেন, অনলাইনে যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ঝুঁকি থেকে শিশুদের রক্ষায় সমন্বিত কোনো আইন নেই। আইন কমিশন থেকে এ ধরনের একটি আইন প্রণয়নের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জাতীয় শিশু কমিশন গঠন, অনলাইনের বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবিলায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালুর বিষয়গুলোও চিন্তা করছে।
আলোচনায় সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, এই ধরনের অপরাধের বিষয়ে অভিভাবকসহ জনগণ একেবারেই অসচেতন। তিনি বলেন, এ ধরনের অপরাধ কমাতে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মুঠোফোনের রেজিস্ট্রেশন করার পাশাপাশি ডিভাইসগুলোর হেফাজত করতে হবে। সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই আপোস করা যাবে না। সন্তানের বয়স ১৮ বছর না হলে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করতে না দেওয়া, সন্তানের ইন্টারনেট ব্যবহারে নজরদারি বাড়ানোসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন তিনি।
ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মিশুক চাকমা বলেন, বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী শিশুসহ নারীরা সাইবার অপরাধের শিকার বেশি হচ্ছে। শহরের তুলনায় গ্রামে ঘটনা বেশি ঘটছে। অভিভাবকেরা অনেক সময় নিজেদের মুঠোফোন সন্তানের হাতে দেন, আর এতে করে অভিভাবকদের অজান্তেই অনেক সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, যাতে মুঠোফোনের মালিক হিসেবে অপরাধী হচ্ছেন অভিভাবকেরা।
মিশুক চাকমা বলেন, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সঙ্গে কোনো চুক্তি না থাকার ফলে শিশুরা পর্নোগ্রাফির শিকার হলেও সেভাবে প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
আসকের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা ও টিডিএইচ নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট কার্তিক চন্দ্র মন্ডল আলোচনায় অংশ নেন। তাঁরা সাইবার অপরাধ নিয়ে জনগণের সচেতনতার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেন।
Leave a Reply