সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চাটখিলে খালে মিললো ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হওয়া ৬১২ বুলেট মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাকে আড়াল করার জন্যই পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে লিপ্ত টেকনাফের করিম মেম্বার চাটখিলে ব্যবসায়িকে অপহরন-চাঁদা দাবি -থানায় মামলা চাটখিলের সাবেক এমপি এইচ এম ইব্রাহিমসহ আওয়ামীলীগের ২৯ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা অপারেশন ক্লিন লীগ’ ঘোষণার দাবি গণঅধিকার পরিষদ নেতার বন্যা দুর্গতদের মাঝে এন আর বি ব্যাংকের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চাটখিলে কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্র লীগের হামলার অভিযোগ টাকা নিয়ে আসামি ছেড়ে দেওয়ায় পুলিশের এস আই ক্লোজড সোনাইমুড়ীতে মোটরসাইকেল চুরি নিয়ে দ্বন্দ্ব, যুবককে গুলি করে হত্যা
মানে বেলাইনে রেললাইন

মানে বেলাইনে রেললাইন

‘বাড়াতে হলে দেশের সমৃদ্ধি, করতে হবে রেললাইন বৃদ্ধি’—রাজধানীর আবদুল গণি রোডে রেল ভবনের সামনে বিশাল একটি বিলবোর্ডে এই দুটি লাইন লেখা। ১৪ অক্টোবর পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন উপলক্ষে রেলপথ মন্ত্রণালয় বিলবোর্ড স্থাপন করেছে।

একদিকে দেশের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন রেললাইন স্থাপনের বার্তা দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে পুরোনো রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো করতে পারছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে মোট রেললাইন ২ হাজার ৯২৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে মানসম্পন্ন রেললাইন মাত্র ৭৩৯ কিলোমিটার বা ২৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। সে অনুযায়ী, দেশের ২ হাজার ১৯০ কিলোমিটার বা ৭৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ রেললাইন চলছে নির্ধারিত মান ছাড়াই।

রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, যন্ত্রাংশের সংকট ও চুরি, লোকবলের অভাব, রেললাইনের ওপর মানুষের চলাচল এবং রেললাইনের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য ব্যালাস্ট পাথর না পাওয়ার কারণে দেশের রেললাইনের এই বেহাল দশা। তাঁদের মতে, এসব সমস্যার সমাধান না করে শুধু নতুন নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হলে রেলওয়ের আধুনিকায়নের সুফল পাওয়া যাবে না।

রাজধানী ঢাকাতেই নয়, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, সংস্কারে ত্রুটির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে রেললাইনে গতি তুলতে পারছে না ট্রেনগুলো। ২০০১ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের প্রায় পুরোটাতেই ৮০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করত। এখন গতি কমিয়ে চলছে ৭২ কিলোমিটারে। ময়মনসিংহের গৌরীপুর থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পর্যন্ত রুটে ৬৫ কিলোমিটারের বদলে ট্রেন চলছে ৫০ কিলোমিটারেরও কম গতিতে।

রেলওয়ের নিরাপত্তা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ফিশপ্লেট দিয়ে রেললাইনের একটি পাতের (রেল) সঙ্গে আরেকটি পাতকে যুক্ত করে রাখা হয়। কিন্তু এই ফিশপ্লেট ঢিলে হয়ে যাওয়ায় রেললাইন বেঁকে যায়। এতে ট্রেনের গতিও ঠিক থাকে না। এ জন্য প্রায়ই ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেললাইনের নিরাপত্তার তদারকির দায়িত্বে থাকা একজন কর্মকর্তা বলেন, নতুন রেললাইনে এ ধরনের সমস্যা নেই। তবে পুরোনো রেললাইনে এই সমস্যা প্রকট। রেললাইন ঠিক রাখার জন্য ওয়েম্যান, গ্যাংম্যান ও কিম্যানদের পাওয়া যায় না। তাঁরা ঠিকমতো রেললাইন মেরামত করেন না।তবে রেলকে গতিশীল করতে নতুন রেললাইন নির্মাণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কাজী রফিকুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলাচল উপযোগী করে নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। সংকটের বিষয়গুলো স্বীকার করে তিনি বলেন, রেলওয়েতে লোকবল সংকট রয়েছে। ব্যালাসড পাথর কিনতে রাজস্ব বরাদ্দ কম পাওয়া যায়। তারপরও রেলওয়েকে গতিশীল রাখা হচ্ছে। নতুন রেললাইনে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করা হচ্ছে। নতুন ইঞ্জিন কেনা হচ্ছে। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণও প্রয়োজন। এরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

যেভাবে রেললাইন তৈরি হয়
রেললাইন নির্মাণে প্রথমে মাটি দিয়ে বাঁধের মতো রাস্তা তৈরি করা হয়। এরপর গর্ত করে নতুন মাটি ফেলে ভরাট করা হয়। সেই জায়গা পরিষ্কার করে পানি ছিটিয়ে রোলার দিয়ে সমান্তরাল করা হয়। সমান্তরাল করে সাবগ্রেড করতে হয়। এ জন্য খোয়া ফেলে একটি স্তর তৈরি করতে হয়। সাবগ্রেডের পর সাব ব্যালাসড করানো হয়। এ জন্য খোয়া ও বালি ফেলতে হয়। এরপর সম্পূর্ণ পাথরের স্তর তৈরি করতে হয়। এই স্তরের ওপরই স্লিপার বসানো হয়। ব্রিটিশ আমলে কাঠের স্লিপার দিয়ে রেললাইন নির্মাণ করা হতো। কাঠের স্লিপারের স্থায়িত্ব কম থাকায় বর্তমানে কংক্রিটের স্লিপার স্থাপন করা হয়। সিমেন্ট, বালু ও রড দিয়ে তৈরি করা হয় কংক্রিটের স্লিপার। ডুয়েল গেজের কংক্রিটের একটি স্লিপারের ওজন ৩৫০ কেজি, ব্রডগেজের ৩০০ কেজি এবং মিটারগেজের স্লিপারের ওজন ২৫০ কেজি। একইভাবে দৈর্ঘ্যও কম–বেশি হয়ে থাকে। এই কংক্রিটের স্লিপারের ওপর ইস্পাতের লাইন বসানো হয়। বাংলাদেশে এখন যে ধরনের রেললাইন তৈরি হচ্ছে, তার ওপর দিয়ে ১০০ কিলোমিটারের কিছু বেশি গতিতে ট্রেন চলানো সম্ভব বলে দাবি রেলওয়ের প্রকৌশলীদের।

মানসম্পন্ন রেললাইন
রেলওয়ের প্রকৌশলী বিভাগ থেকে ১৪টি রুটকে মানসম্পন্ন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো পার্বতীপুর-পঞ্চগড় ১৩২ কিলোমিটার, কাঞ্চন-বিরল সীমান্ত ১২ কিলোমিটার, লালমনিরহাট-বুড়িমারী ৮৫ কিলোমিটার, রাজশাহী-রোহনপুর সীমান্ত ৮৫ কিলোমিটার, আমনুরা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১৩ কিলোমিটার, মাঝগ্রাম-পাবনা ২৫ কিলোমিটার, টঙ্গী-ভৈরববাজার (ডাউন লাইন) ৬৪ কিলোমিটার, লাকসাম-চিনকী আস্তানা (ডাউন লাইন) ৫১ কিলোমিটার, ষোলোশহর-দোহাজারী ৪১ কিলোমিটার, লাকসাম-চাঁদপুর ৩১ কিলোমিটার, কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া ৭৫ কিলোমিটার, কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ-গোবরা ৪৭ কিলোমিটার, পাচুরিয়া-ফরিদপুর ২৫ কিলোমিটার, পাবনা-ধালারচর ৫৩ কিলোমিটার।

তবে ৭৩৯ কিলোমিটার মানসম্পন্ন রেললাইনের বাইরে বাকি ২ হাজার ১৯০ কিলোমিটারকে ‘মানহীন’ বলতে নারাজ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরোনো রেললাইন দিয়েই ট্রেন সার্ভিস সচল রাখা হচ্ছে। নতুন নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। পুরোনো রেললাইনগুলোও সংস্কার করা হচ্ছে। আশা করা যায়, এর সুফল আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে।’

৪৮ বছরে রেললাইন বেড়েছে ৭১ কিলোমিটার
বাংলাদেশে রেলওয়ের ইতিহাস দেড় শ বছরেরও বেশি। ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর ব্রিটিশ শাসনামলে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতী পর্যন্ত ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার লাইন দিয়ে এই অঞ্চলে রেলওয়ের যাত্রা শুরু হয়। আসাম-বাংলা রেলওয়ে থেকে পাকিস্তান আমলে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে (ইবিআর) এবং স্বাধীন দেশে নাম হয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। ভারত বিভক্তিতে ইবিআর উত্তরাধিকার সূত্রে পায় ২ হাজার ৬০৬ দশমিক ৫৯ কিলোমিটার রেললাইন। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ রেলওয়ে পায় ২ হাজার ৮৫৮ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন। তবে ২০১০-১১ অর্থবছরে রেললাইন কমে হয় ২ হাজার ৭৯১ কিলোমিটার। পরের বছর ২০১১-১২ সালে রেললাইন বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৮৭৭ দশমিক ১০ কিলোমিটার। ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত সংখ্যাটি একই থাকে। সবশেষ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট রেললাইন দাঁড়ায় ২ হাজার ৯২৯ দশমিক ৫০ কিলোমিটারে। ৪৮ বছরে ৭০ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার রেললাইন বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, নব্বইয়ের দশকে বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলো রেল খাতে ঋণ দেওয়া একেবারেই কমিয়ে দেয়। তখন বাংলাদেশ রেলওয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকায় সড়কপথে অর্থ বরাদ্দ হতে থাকে। এর ফলে ওই সময় এ দেশে রেলওয়ে সেক্টর অবহেলিত হয়ে পড়ে। বয়সের ভার, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব আর লোকবল সংকটে রেললাইন ও ইঞ্জিনগুলো ধুঁকতে থাকে।

রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে ২০১১-১৫ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ৪৩ হাজার ৫০৯ কোটি ৮০ লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ২০১৬-২০ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এ খাতে ৬৬ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নতুন ৮৫৬ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ, ১ হাজার ১১০ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ এবং ট্রেনের গতি বাড়ানো ও নিরাপদ চলাচলের প্রকল্প রয়েছে।

তবে রেললাইনগুলো বাধাহীন করলে রেলওয়েতে গতি আসবে বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল হক। তিনি বলেন, লেভেল ক্রসিংগুলোকে বাধাহীন করতে হবে। একই সঙ্গে রেললাইনের পাশে ভূমির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। বর্তমান কাঠামোতে ৭০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো সম্ভব। কিন্তু যথাযথ যাচাই না করে বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়ে রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। সরকার প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করছে। নতুন রেললাইনের মাধ্যমে বাসের মতো ডোর টু ডোর সেবা রেলওয়ে দিতে পারবে কি না, সেসব বিষয় ভাবা হচ্ছে না।

রেললাইনসামগ্রীর দুষ্প্রাপ্যতা
রেললাইনের নির্মাণসামগ্রী বেশ দুষ্প্রাপ্য। মাটি ছাড়া সব উপকরণ আমদানিনির্ভর। রেললাইনের পাত চীন থেকে তৈরি করিয়ে আনতে হয়। কংক্রিটের স্লিপার তৈরির জন্য রড ও পাথর আমদানি করা হয়। বালু ও সিমেন্টের স্লিপার সিলেটের ছাতক ও পঞ্চগড়ে তৈরি করা হয়। রেললাইনের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য ব্যালাসড পাথর ভারত থেকে আমদানি করা হয়। তবে ভিয়েতনাম থেকেও পাথর আনা হয়।

রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের তথ্য অনুসারে, রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিবছর ৫ লাখ ৫৬ হাজার ঘনফুট ক্রাশড স্টোন বা চূর্ণ পাথর প্রয়োজন হয়। কিন্তু মেলে মাত্র ১ লাখ ঘনফুট পাথর।

রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রতি মিটার রেললাইন নির্মাণে প্রয়োজন হয় ২ ঘনমিটার পাথর। প্রতি কিলোমিটারে ২ হাজার ঘনমিটার পাথর। ট্রেন চলাচল, বন্যাসহ প্রাকৃতির নানা কারণ এবং মানুষের চলাচলের কারণে প্রতিবছর রেললাইন থেকে ১০ শতাংশ পাথর কমে যায়। এই ১০ শতাংশ পাথর রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজন হয় ৫৬ হাজার ঘনফুট পাথর।

পর্যাপ্ত পাথর না থাকলে ট্রেন চলাচলের সময় রেললাইনের ভারসাম্য ঠিক থাকে না। তাই পাথর স্বল্পতায় ট্রেনের গতিও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে খোদ রাজধানী ঢাকায়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ব্রডগেজ ও মিটারগেজ—দুই ধরনের রেললাইন রয়েছে ঢাকায়। এর দৈর্ঘ্য ৩৫ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলার উপযোগী করে ব্রডগেজ রেললাইন প্রস্তুত করা হয়েছে। গত এক বছরে ঢাকায় ট্রেন চলাচলে ট্রেনের গতি চার কিলোমিটার কমিয়ে ঘণ্টায় ৩৬ থেকে ৩২ কিলোমিটার করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক (প্রকৌশল) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, একটি ট্রেনের সম্পূর্ণ ওজন চাকাগুলোর ওপর এসে পড়ে। সেখান থেকে এই ভার পড়ে রেললাইনের নিচে থাকা স্লিপারে। ট্রেনের সঙ্গে স্লিপারের ভারসাম্য রাখতে রেললাইনে পাথর বা ব্যালাসড বসানো হয়। কিন্তু ঢাকায় রেললাইনে এখন পাথর রাখা যাচ্ছে না। ট্রেনের গতিবেগের সঙ্গে কম্পনের বিষয়টিও জড়িত। এসব বিবেচনা করে রেললাইন নির্মাণ করা হয়। ট্রেন চলাচলে প্রতিবছর ১০ শতাংশ পাথর মাটির সঙ্গে মিশে যায়। তবে রাজধানীতে রেললাইনের ওপর ২৪ ঘণ্টাই মানুষের চলাচল রয়েছে। এতে রেললাইনের ওপর পাথর থাকছে না।

যন্ত্রাংশের সংকট
এ দেশে সনাতন রেললাইনের লোকোমোটিভ চালিয়ে ত্রুটি শনাক্ত করা হয়। অনেক সময় ট্রলি চালিয়ে এই ত্রুটি শনাক্ত করা হয়। রেলওয়ের বেশ কয়েকজন প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে এমন কথাই জানা গেল। তাঁদের মতে, রেললাইনে চলার সময় ঝাঁকুনি খেলে সমস্যা ধরা যায়। তবে আধুনিক ব্যবস্থায় টেম্পিং মেশিন দিয়ে রেললাইনে ত্রুটি শনাক্ত করা হয়। এই মেশিন দিয়ে দ্রুত ত্রুটি শনাক্ত করা সম্ভব। বাংলাদেশ রেলওয়েতে মাত্র চারটি টেম্পিং মেশিন রয়েছে। কিন্তু রেললাইনের অনুপাতে ২২টি টেম্পিং মেশিন দরকার। শুধু মেশিন হলেই চলবে না, এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আলাদা জনবল ও ওয়ার্কশপ প্রয়োজন। এর কিছুই রেলওয়েতে নেই।

সূত্র : প্রথম আলো

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2018 dailychatkhilkhobor.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com