সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন
গোনাহ যত বড় ও কঠিন হোক না কেন আল্লাহর রহমতের কাছে তা একেবারেই তুচ্ছ। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে মারাত্মক গোনাহ করে তবে তার উচিত আল্লাহর হুকুম পালন করা এবং বেশি বেশি তাঁর রহমতের আশা করা।
আল্লাহর হুকুমের মধ্যে নামাজ হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ হুকুম। মানুষ যত বড় গোনাহ-ই করুন না কেন, সে যদি নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমত কামনা করে তবে আল্লাহ তাআলা তা মাফ করে দেন। হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা বর্ণনা করেন-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, এক ব্যক্তি এক মহিলাকে চুম্বন করে বসে। পরে সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বিষয়টি (তার কৃতকর্মের কথা) জানায়।
তখন আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করেন, ‘দিনের দু’প্রান্তে সকাল ও সন্ধ্যায় এবং রাতের প্রথম অংশে নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। নিশ্চয় ভালো কাজ পাপাচারকে মিটিয়ে দেয়।’
(তখন) লোকটি জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটি কি শুধু আমার বেলায় প্রযোজ্য?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার সব উম্মতের জন্যই।’ (বুখারি)
নামাজসহ সব ভালো কাজের মাধ্যমে মানুষের গোনাহ দূরীভূত হওয়ার প্রমাণে অন্য হাদিসে এসেছে-
হজরত হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন একদিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র কাছে বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেন, তোমাদের কে ফেতনা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বক্তব্য স্মরণ রেখেছ? হজরত হুজাইফা বললেন, ‘যেমনি তিনি (প্রিয়নবি) বলেছিলেন, হুবহু তেমনি আমি স্মরণ রেখেছি। হজরত ওমর বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী স্মরণ রাখার ব্যাপারে তুমি খুব দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছ। আমি বললাম-
‘(রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন) মানুষ নিজের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পাড়া-প্রতিবেশিদের ব্যাপারে যে ফেতনায় (গোনাহে) পতিত হয়, নামাজ, রোজা, দান-সাদকা, (ন্যয়ের) আদেশ, (অন্যায়ের) নিষেধ তা (গোনাহ বা ফেতনা) থেকে দূরভীত করে দেয়।’ (বুখারি)
সুতরাং যখনই কোনো গোনাহ বা খারাপ কাজ সংঘটিত হয়ে যায়, তখনই নামাজ পড়ার মাধ্যমে তার কাফফারা আদায় করা উত্তম। কেননা রোজা রাখা, দান-সাদকা করাসহ অন্যান্য আদেশ ও নিষেধ থেকে নামাজ পড়া অনেক সহজ।
তাইতো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের মাধ্যমে খারাপ কাজের প্রতিবিধান করার কথা বলেছেন। আয়াত নাজিল করে গোনাহ মুক্তির যে (নামাজের) নির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা।
সুতরাং গোনাহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে গোনাহ থেকে নিজেদের মুক্তিকে তরান্বিত করা একান্ত জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গোনাহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নামাজ আদায় করে তা থেকে মুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার সব গোনাহ থেকে হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। গোনাহমুক্ত জীবন-যাপন করে পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের সফলতা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Leave a Reply