সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন
ঘরের মাঠে ২০১৪ বিশ্বকাপ ব্রাজিলকে হতাশ করেলেও এবারের কোপা আমেরিকা হতাশ করেনি ব্রাজিলকে। এক যুগ পর পেরুকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা ঘরে তুলল সেলেসাওরা। সর্বশেষ দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় আসরের ট্রফিটি পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা জিতেছিল ২০০৭ সালে। এই মারাকানা, সেই মারকানা। ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসে দগদগে এক ঘা হয়ে আছে ১৯৫০ সালের ‘মারাকানাজো’ ট্রাজেডি। এবার আর কোনো ট্রাজেডি নয়, উৎসবের রং ছড়ালো মারাকানা। হলুদ-নীলের জয় হলো, ১২ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা ঘরে তুলল ব্রাজিল। রোববার রাতে টুর্নামেন্টের ফাইনালে পেরুকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে সেলেসাওরা। কোপা আমেরিকায় সর্বশেষ ব্রাজিল শিরোপা জিতেছিল ২০০৭ সালে। তবে এ নিয়ে গত ৯ আসরে ৫ বারই চ্যাম্পিয়ন হলো তারা, সবমিলিয়ে নবমবার। এতে অক্ষুন্ন রইলো আয়োজক হিসেবে কোপা আমেরিকায় কখনো শিরোপা হাতছাড়া না করার রেকর্ডটিও।ম্যাচে সব দিক থেকে এগিয়ে ছিল ব্রাজিলই। তবে ৭০ মিনিটের মাথায় গ্যাব্রিয়েল হেসুস দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর ১০ জনের ব্রাজিলকে কিছুটা চেপে ধরে পেরু, তবে ওই চেপে ধরা পর্যন্তই। সাফল্যের দেখা মেলেনি। খেলার প্রথমার্ধের শুরুতে পেরু ভালো একটি সুযোগ পেয়েছিল। ২ মিনিটের মাথায় ফ্রি কিক থেকে ক্রিশ্চিয়ানো কুয়েভার ডান পায়ের শট একটুর জন্য গোলপোস্ট মিস করে। ষষ্ঠ মিনিটে মিস করেন রেনাতা তাপিয়া। তবে ব্রাজিল সুযোগ পেয়ে আর মিস করেনি। ১৫ মিনিটের মাথায় গ্যাব্রিয়েল হেসুসের ক্রস থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের ছোঁয়ায় দারুণ এক গোল করেন এভারটন (১-০)। ২৪ মিনিটে আরও এক গোল পেতে পারতো ব্রাজিল। কৌতিনহোর বক্সের মধ্য থেকে নেয়া শট একটুর জন্য লক্ষভ্রষ্ট হয়। ৩৬ মিনিটে মিস করেন রবার্তো ফিরমিনো। বাঁ পাশ থেকে অ্যালেক্স সান্দ্রোর লম্বা ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে ছিলেন ঠিকই। কিন্তু সেটা পোস্টের একটুখানি উপর দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধ তখন প্রায় শেষ হবার পথে। ৪৪ মিনিটের মাথায় নিজেদের বক্সের মধ্যে থিয়াগো সিলভার হাতে বল লেগে যায়, পেনাল্টি পায় পেরু। পাওলো গুইরেরোর নেয়া পেনাল্টি কিক অ্যালিসন বেকার আটকে দেবার সুযোগই পাননি (১-১)। তবে ব্রাজিল পেরুর সেই আনন্দের সময়টা প্রলম্বিত হতে দেয়নি। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের তিন মিনিটের মাথায় পেরুর রক্ষণের ভুলেই বল পেয়ে যান আর্থার। সেটা আলতো টোকায় তিনি দিয়ে দেন বক্সের মধ্যে দৌড়ে যাওয়া গ্যাব্রিয়েল হেসুসকে। হেসুসও চোখের পলকে সেটাকে বানিয়ে নেন গোল (২-১)। দ্বিতীয়ার্ধেও দাপট দেখিয়ে খেলতে থাকে ব্রাজিল। তবে ৪৭ মিনিটে থিয়াগো সিলভা আর দানি আলভেজ, ৫১ মিনিটে কৌতিনহোর চেষ্টাগুলো জাল খুঁজে পায়নি। ৫৪ আর ৫৭ মিনিটে আরও দুটো লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন ফিরমিনো। ৬৯তম মিনিটে পেরুর কার্লোস জামব্রানোর সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে ছোটখাটো এক ফাউলেই দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় গ্যাব্রিয়েল হেসুসকে। ১০ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাজিল।
এরপরই কিছুটা চাঙা হয়ে উঠে পেরু। এ সময় বেশ কয়েকটি আক্রমণ গুছিয়ে উঠে তারা। ৭৪ মিনিটে বিপদ হতে পারতো ব্রাজিলের। বক্সের অনেক বাইরে থেকে নেয়া পেরুর এডিসন ফ্লোরেসের শট একটুর জন্য গোলপোস্ট মিস করে যায়।
এরই মধ্যে ম্যাচের ৮৬ মিনিটে সবচেয়ে বড় ভুলটি করে বসে পেরু। কয়েকজনকে কাটিয়ে প্রায় একক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন এভারটন। তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন পেরুর জামব্রানো। ভারের সাহায্য নেন রেফারি, যাতে সিদ্ধান্ত মেলে পেনাল্টির। আর সে পেনাল্টি থেকে গোল করেন রিচার্লিসন (৩-১)। শেষপর্যন্ত ওই ব্যবধানে জিতেই ১২ বছরের আক্ষেপ ঘুচায় ব্রাজিল।
Leave a Reply