সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন
ব্যাটিং অনুশীলনে হালকা একটু ব্যথা পেয়েছেন হাতে। গুরুতর কিছু নয় তো? ড্রেসিংরুমের সামনে দাঁড়ানো ইমরুল কায়েসের হাসি বলে দেয়, চিন্তার কিছু নেই, ‘আরে নাহ, একটু বল লেগেছিল। তারপরও তো ব্যাটিং করেছে। তেমন কিছু নয়।’
গত কয়েকটা দিন ইমরুলের একটু অন্যরকম কাটছে। ক্যারিয়ারের সেরা ছন্দে আছেন বললেও ভুল হবে না। ১০ বছরের ক্যারিয়ারে পার্শ্বনায়ক হয়েই কেটেছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে আবির্ভূত হয়েছেন নায়ক হিসেবে। এই যে নায়ক হওয়া, এই যে প্রচারের আলোয় থাকা, কেমন লাগছে ইমরুলের? ক্যারিয়ারের নতুন এক বাঁকে দাঁড়ানোর শিহরণই নিশ্চয়ই অনুভব করছেন?
ইমরুলের অবশ্য দুই রকম অনুভূতি হচ্ছে। আজ দুপুরে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে সেই অনুভূতির কথা শোনালেন বাঁহাতি ওপেনার, ‘কেউ যদি প্রশংসা করে স্বাভাবিকভাবেই ভালো লাগে। তবে এর উল্টো দিকটাও ভাবতে হচ্ছে। আমি ওভাবেই চিন্তা করছি। আজ ভালো খেলছি বলে অনেক প্রশংসা করছেন, কাল আবার খারাপ করলে সবকিছু ভুলে যাবেন। সবকিছুই চিন্তা করতে হয়। দিন শেষে নিজের খেলায় মনোযোগ দেওয়াটাই ভালো।’
ইমরুল মনে করিয়ে দিলেন সবশেষ সিরিজটাই তাঁর ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ বাঁক বদল নয়। আগেও তিনি ভালো খেলেছেন। কিন্তু আলোচনটা সেভাবে হয়নি। কেন হয়নি সেটির কারণ তাঁর জানা, ‘আগে শক্তিশালী দলের বিপক্ষে রান করেছি। কিন্তু দেখা গেছে ৫০-৬০-৭০ রানে থেমে গেছি। ইনিংসটা হয়তো বড় করতে পারিনি। বড় করতে পারলে বলতে পারতেন আপনি অনেক পরিণত ব্যাটসম্যান, ধারাবাহিক। ২০১০ সালে প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি রান করেছি। তখন কিন্তু তেমন কিছু বলা হয়নি এটা নিয়ে। কারণ, আমার সেঞ্চুরি কম ছিল। এখন সেঞ্চুরি করেছি বলে সবার চোখে পড়েছে। আগেও রান করেছি কিন্তু বড় করতে পারিনি। এখন চেষ্টা করি থিতু হয়ে গেল ইনিংসটা বড় করতে। দলের চাহিদা অনুযায়ী খেলতেও চেষ্টা করি।’
সিলেটের স্টেডিয়াম যেন একটা নন্দন কানন। এই কাননে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেট। নন্দন কাননে এবার ফুল হয়ে ফুটতে চান ইমরুল, গাঁথতে চান সেঞ্চুরির মালা। আর তাঁর কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকছে সবশেষ সিরিজটা, ‘যদিও সংস্করণ ভিন্ন। তবে যদি ছন্দে থাকেন, কীভাবে রান করবেন সেটা মাথায় সাজানো থাকে। এটা ওয়ানডে, টেস্ট বা টি-টোয়েন্টি, যেটিই হোক। জিনিসটাই হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। সবাই জানি, যখন রানে থাকি না তখন মনে কিছুটা সন্দেহ কাজ করে। চেষ্টা করছি যে আত্মবিশ্বাস আছে, টেস্টে সেটা কাজে লাগাতে।’
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অনিয়মিত হলেও একটা সময় ইমরুল নিয়মিতই ছিলেন টেস্ট দলে। অথচ সবশেষ টেস্ট দলেই তিনি জায়গা পাননি। গত দুই বছর টেস্টে খুব একটা ভালো করতে পারেননি। টেস্টে সবশেষ ফিফটিই পেয়েছেন ১৭ ইনিংস আগে, ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে। আগে টেস্টে ভালো করতেন নিয়মিত, ইমরুলের সামনে তখন চ্যালেঞ্জ থাকত সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভালো করা। এখন চ্যালেঞ্জটা হয়ে গেছে ঠিক উল্টো। সমস্যা নেই, সিলেটের দৃষ্টিনন্দন মাঠেই সেটি উতরে যেতে চান ইমরুল।
Leave a Reply